Wednesday, 8 February 2017

একটিমাত্র কবিতার জন্য

বাংলা ভাষার উপর একটা সুপরিকল্পিত আক্রমণ কয়েক দিন ধরেই চোখে পড়ছে। বাংলা ভাষার ধারক, বাহক, রত্নগর্ভাদের উপক্ষা করা বা একরকম ছেঁটে বাদ দিয়ে দেওয়া, তার নিজস্ব স্বত্বার উপর ছুরি কাঁচি চালানোর প্রবণতা ইত্যাদি ইত্যাদি দুই বাংলাতেই বিদ্যমান। কবিতাটা লিখলাম সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে।
- রাজর্ষি ঘোষ

একটি হিন্দু কবিতা রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলেই
কারফিউ বসবে শহর জুড়ে
আর কফিশপে স্যালাইন পাবে রাতের পাখিরা।

একটি মুসলিম কবিতা উঁকি দিলে জানলা থেকে
কাঁটাতার ভেদ করে ছুটে আসবে বেয়নেট
আর মোমবাতি মিছিলে হাঁটবে অসংখ্য কাকতাড়ুয়া।

অথচ একটি বাংলা কবিতার জন্ম হলে
এলভিস দেবেন পশম
নেরুদা সুগন্ধী

আর মৃত্যু দেবে মৌলবাদীরা।


০৯/০২/২০১৭ 

Tuesday, 7 February 2017

অন্ধকারের ওম


রাজর্ষি ঘোষ

হারিয়েছ বট, ঘাস জমেছ আমার শিকড়ে
পান করেছ আকন্ঠ নিদ্রা। এখন সমুদ্র শেষের দিনে
বেসাতি বেঁধেছি আমি খড়ের আলোয়। এখানে অনিমিখ
চাঁদ লুকোছায়া। এখানে ধোঁয়ার আদরে ঘুমিয়েছ
আমার শহর।

উনুনের ওমে জাগে হাতরুটি, কতটা অন্ধকার
হলে জাগা যাবে নিজের আলোয়। যেখানে নোনা হাওয়া
আর সবুজাভ ঢেউ এসে মিলেছে বালি পথ;
তুমি ডুবেছ ভেসেছ, সেখানেও তারা ছিল আঁকড়ে একমাত্র
নুলিয়া কলোনি।

সার সার কাঁকড়ার মত স্ট্রীট ল্যাম্প
এ নয় আমার। অন্ধকারের জীব; ভালোবাসি মিশে যেতে
রাতের রাস্তায়, লোডশেডিং সওয়ারি হয়ে নিভন্ত সাইকেলে।  
খুঁজে নিতে একমাত্র প্রেম কুটো সেখানে
যেখানে ব্রিজ মেশে এক্সাইড হয়ে।


০৭/০২/২০১৭ 

Thursday, 2 February 2017

ছ’ টাকা


রাজর্ষি ঘোষ

দরজা থেকে ঝুপ-ঝাপ ঝুলে থাকে ওরা।
কেউ বিরাটি, কেউ বিবাদী বাগ, কেউ মাণিকতলার লোহার দোকানের নিতান্ত চাকুরে।
ওরা আসে, বাসে আর রুমাল রেখে যায় প্রতিটা সিটের কোণায় কোণায়।
ওদের নিজস্ব গল্প আছে। উপন্যাসও। এক বাস পৃথিবী চলছে তেপান্তরের পারে।

তবুও সেই পৃথিবীর শেষে অন্য পৃথিবী, অন্য পরিখা
যেখানে বাস করে শুধু লক্ষ্মীছাড়া স্বপ্নের কন্ডাক্টর... আর ড্রাইভার ডানা মেলে উড়ে গেছে
বৃহস্পতির দিকে।

সেখানে, সেখানেই মিনিমাম বাস ভাড়া
আজ থেকে নির্ধারিত হল

ছয় টাকা।


০৩/০২/২০১৭